ঝিনাইদহে বর্তমানে পাঁচটি পার্ক রয়েছে। এগুলো হলো শহরের চুয়াডাঙ্গা সড়কের জোহান ড্রিমভ্যালি পার্ক অ্যান্ড পিকনিক স্পট, কুষ্টিয়া সড়কের তামান্না পার্ক, কালীগঞ্জের নলডাঙ্গা রাজবাড়ী, কোটচাঁদপুরের বকুল সিটি পার্ক ও শহরের নবগঙ্গা নদীর পাড়ে অবস্থিত প্রান্তিক শিশু পল্লী।
সরেজমিনে দেখা যায়, অনেক পার্কে পরিচর্যার অভাবে ঘন ঘাস জন্মেছে। পার্কের রাইডারগুলো অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে থাকায় নষ্ট হচ্ছে। প্রথম দিকে পরিচর্যা থাকলেও লোকসানের কারণে পরে অনেক পার্কে তা বন্ধ করে দিয়েছে মলিকপক্ষ।
জোহান ড্রিমভ্যালি পার্কের মালিক মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, এটি একটি বড় বিনোদন কেন্দ্র। ঝিনাইদহ জেলা ছাড়াও আশপাশের জেলা থেকে মানুষ পিকনিক করতে এখানে আসে। বিনোদনের ভালো ব্যবস্থাসহ রিসোর্ট সেন্টারে থাকার ব্যবস্থাও রয়েছে। কমিউনিটি সেন্টার থাকায় অনেক সংস্থা বিভিন্ন কর্মসূচির জন্য এসে থাকে। কিন্তু গত ৫ মাস ধরে পার্ক বন্ধ রয়েছে। পার্ক বন্ধ থাকলেও প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ কর্মচারী দিয়ে পরিচর্যা করাতে হচ্ছে। দর্শনার্থী আসা বন্ধ আর পরিচর্যা বাবদ গত পাঁচ মাসে ৫০ লাখ টাকার লোকসান হয়েছে।
সরকার পার্ক মালিকদের প্রণোদনা দিলে এ ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে নেয়া সম্ভব হতো বলে উল্লেখ করেন তিনি।
তামান্না পার্কের ম্যানেজার রুহুল আমিন জানান, বন্ধ থাকার কারণে এর সাথে জড়িত কর্মচারীরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। পার্কের পক্ষ থেকে তাদের সহযোগিতা করা হলেও তা পর্যাপ্ত হচ্ছে না। পার্ক চালু থাকলে তারা এ সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতেন।
মিলন হোসেন নামে পার্কের এক কর্মচারী জানান, তারা কোনো ত্রাণ সহায়তা পাননি। পার্ক মালিক মাঝে মধ্যে সহযোগিতা করলেও যা পাচ্ছেন তাতে কোনোমতে সংসার চলছে। খুব কষ্টে দিন যাচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে দ্রুত পার্ক চালু করার দাবি তার।
জোহান ড্রিমভ্যালির ম্যানেজার মো. হাসানুজ্জামান বাবু বলেন, স্থায়ী-অস্থায়ী মিলে এখানে প্রায় দেড় শ মানুষ কাজ করতেন। এখন পাঁচ মাস তারা বেকার। মানবেতর জীবনযাপন করছেন। পার্কের সামনে প্রায় শতাধিক দোকান ছিল। সেগুলোও বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। পার্ক না চললে দোকানগুলো চলে না। যে কারণে তারাও চরম কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন।
এ ব্যাপারে ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক সরোজ কুমার নাথ বলেন, ‘পার্কের মালিকরা যদি স্বাস্থ্যবিধি মেনে পার্ক চালান তাহলে শর্ত অনুযায়ী আবেদন করলে তা যাচাই করে সিন্ধান্ত নেয়া হবে।’